ডারউইনের বিবর্তনবাদ - ইসলাম বিরোধী
বিবর্তন বিরোধিতা একটি বিশ্বাসগত অথবা বৈজ্ঞানিক অবস্থান যা মানুষের উদ্ভবের ও বিকাশের বিবর্তন তত্ত্ব কে অস্বীকার করে। বিবর্তনবাদের ধারণা ঊনিশ শতকে দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ববিদ এবং সাধারণ মানুষ স্ব স্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এ তত্ত্বের বিরোধিতা শুরু করে। অধিকাংশ মানুষ পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবকে ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত ও অবদান বলে বিশ্বাস করে। এ বিশ্বাস সকল ধর্মগ্রন্থ সমর্থিত। বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের উদ্ভবের তত্ত্ব বৈজ্ঞানিকদের বিরোধিতারও সম্মুখিন হয় কারণ বিবর্তনবাদের বয়ান যৌক্তিক প্রতীয়মান হলেও এ মতবাদ প্রমাণ করা সম্ভব ছিল না।
চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে তার বই অন দ্য অরিজিন অব স্পিসিস প্রকাশ করেন। প্রথমে এটা বিজ্ঞানীদের সমালোচনার মুখে পড়ে কারণ তৎকালীন সময়ে জীবের পরিবর্তনের/জীবের উৎপত্তির/ এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতির উদ্ভবের নানান ধারণা('এসব পরীক্ষণীয় ছিল না') প্রচলিত ছিল। কিন্তু অবশেষে বৈজ্ঞানিক মহল সম্পুর্ণভাবে একে স্বীকার করে নেয়। ১৯৪০ এর পরে মুলধারার জীববিজ্ঞানীরা সকল বিতর্কের উর্ধ্বে উঠে বিবর্তনকে স্বীকৃতি দেন কারণ তারা বিবর্তনকে(নব্য ডারউইন সংশ্লেষণ ও বিবর্তনের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করে) পর্যবেক্ষণ করেন। সেসময় থেকেই বিজ্ঞানীদের সংস্থার তুলনায় ধর্মীয় জায়গা থেকে অধিক সমালোচনা এসেছিল। সৃষ্টিবাদের নামে।(এমন এক প্রকার বিশ্বাস যেখানে ধারণা করা হয় অসীম ক্ষমতাধর ঈশ্বর/সত্তা এই মহাজগৎ এবং জীবন সৃষ্টি করেছেন অলৌকিক ক্ষমতার দ্বারা)। নব্য সৃজনবাদীরা এক নতুন পথচলার সূচনা করে, যার নাম রাখা হয় সৃষ্টিবাদ বিজ্ঞান, নব্যসৃজনবাদ বিজ্ঞান, বুদ্ধিমান ডিজাইন ইত্যাদি। এইসব কিছু এমন এক বিশ্বাসের কথা বলে যেখানে জীবনকে অলৌকিক ক্ষমতাধরের নকশা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বলা হয় এ মহাজগতের সব কিছুই সৃষ্টি হয়েছে কোনো বুদ্ধিমান ঈশ্বরের দ্বারা। তারা দাবী করেন এটা বিজ্ঞানসম্মত এবং সর্বসাধারণের এটা পড়া এবং শিক্ষা নেওয়া উচিত। এই সৃজনবাদ বনান বিবর্তনবাদ বিতর্ক বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং নতুন নতুন অভিযোগ বিবর্তনের বিরুদ্ধে (যেমনঃ স্বাভাবিক বিজ্ঞান মানছে না, নৈতিকতাহীন, সম্ভাবনা সূত্রের লঙ্ঘন এবং প্রমাণ ও ভিত্তিহীন ইত্যাদি) উত্থাপিত হতে থাকে। যাই হোক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় তাদের এই সব অভিযোগকে নিন্দুকের অপব্যাখ্যা, ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করে।