সমরেশ মজুমদারের বিখ্যাত সাতকাহন গ্রন্থটি পড়ুন
সাতকাহন ، উপন্যাসটির সূচনা ، বিস্তৃতি আর প্রবাহধারা একজন নারীকে নিয়ে। নাম দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়। দৃষ্টিতে উপন্যাসটিকে، দীপা হলো প্রতিনিধি সমাজ কখনো সংস্কার، কখনো দুর্বলতা আবার চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে চলতে থাকে তাদের নিরন্তর যুদ্ধ। মৃত্যুর পর জন্মদাতা পিতার কাপুরুষতায় দীপার আশ্রয় মেলে তার মাসি-মেসোর সংসারে। না ، অপরের সন্তান মনে করে শুরুতে ، শুরুতে নিজের সন্তানের মত ভালবাসা আর আদর দিয়েছিল অঞ্জলি আর অমরনাথ দুইটা পুত্র সন্তানের সাথে এই কন্যাটিকে বুকে টেনে নিয়েছিল ওরা। মা মনোরমাও কখনো দীপাকে আলাদা করে দেখতে চাওনি। বৈধব্যের সংস্কারের কারণে নারী পুরুষের ভেদাভেদের চেতনায় মনোরমা সারাক্ষন দীপাকে আবদ্ধ রাখতে চাইত। সত্যসাধনের বাবু তার অভিজ্ঞ চিন্তা শক্তি দিয়ে দীপার মাঝের মেধাবী সও্বাকে সহজেই চিনে নিয়েছিলেন। সেজন্য নিঃসন্তান এই মানুষটির দীপাকে নিয়ে স্বপ্ন দানা বাধে। সমাজের ঘুনেধরা সংস্কারগুলো দীপার পরিবারের মানুষগুলো পিছু ছাড়ে না। এগার বছর বয়সে এক বিত্তবান ঘরের নিঃশেষিত রুগ্ন ছেলের সাথে দীপার বিয়ে হয়। অসুস্থ সমাজের চোখে একটি মেয়ের বিয়ের যোগ্যতা বিচার করা হয় তার মানসিক পূর্নতা নিয়ে নয় ، তার ঋতুর সক্ষমতা নিয়ে। তাএর ব্যতিক্রম হয় না। বিয়ের পর মাত্র একটা রাতে জন্য সে বধূ হয়ে থাকতে পারে। একটিরাতে দীপার সাথে কি হয়েছিল নিঃসন্দেহে পাঠকদের হৃদয়ে ঘটনাগুলো আলোড়িত করে তুলবে। পরের দিনই দীপার স্বামী মারা যায় আর মাত্র ، মাত্র বছরের একটা বাচ্চাকে একা পাঠিয়ে দেয়া বাপের বাড়িতে জীবনের বিভীষিকাময় রাতের পর শুধু দীপার স্বামীর মৃত্যু আরেকটি ، আরেকটি মৃত্যু হয়েছিল ، যেটি ছিল একটি হত্যা। শৈশবিক সত্তার হত্যা হয়েছিল সেই রাতে। কেউ শুনে নি ، কেউ জানতে পারেনি। এই প্রত্যাবর্তনে অমরনাথ তার ভুল বুঝতে পারেন। পড়াশোনা আবার শুরু করা হয়। তবে সেই প্রাণোচ্ছ্বল ، হাসি-খুশী দীপাকে এ বাড়ির আর কেউ কখনো দেখতে পায়নি। যেন এক প্রস্তর খন্ড। দীপার উপর নির্মম বৈধব্য চাপিয়ে দিলেও দীপা কোন প্রতিবাদ করে না। সে শুরু করে নতুন এক যুদ্ধ। নিজেকে উজাড় করে খোজে মুক্তির পথ। মেধাবী ফলাফল করে জলপাইগুড়িতে ভর্তি হয় উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য। এই সংগ্রামে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন অমরনাথ। মাধ্যমিকের গন্ডিও পার হতে দীপাকে খুব বেশি অসাধ্য সাধন করতে হলো না। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হবার পরে অমরনাথ দীপাকে ছেড়ে চলে যান। অমরনাথের এই স্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেনি অঞ্জলি। মৃত্যূর জন্য দায়ী করা হলো দীপাকে। তার পরিবারের ছায়া থেকে বের করে দেওয়া হলো। দীপ সম্পূর্ণ একা হয়ে পাশে ، পাশে এসে দাড়াবার মত খুজে পেল না কাউকে দীপা কি পেরেছিল এই সমাজে হিংস্র আর স্বার্থান্বেষী শকুনের ভিড়ে নিজেকে রক্ষা করতে؟ নিজেকে সেই শিক্ষার আলোয় নিজেকে ভাসাতে যে আলো তাকে মুক্তি দেবে؟ জানতে হলে ، হাটতে হবে কিছুটা পথ দীপাবলির সাথে। প্রতিক্রিয়াঃ আমি চিত্রাঙ্গদা। দেবী নহি ، নহি আমি সামান্যা রমণী। করি রাখিবে মাথায় ، সেও আমি নই؛ করি পুষিয়া রাখিবে পিছে সেও আমি নহি। যদি পার্শ্বে রাখো মোরে ، দুরূহ চিন্তার দাও দাও ، যদি অনুমতি কর কঠিন ব্রতের তব হইতে হইতে ، যদি সুখে দুঃখে মোরে কাব্যের চিত্রাঙ্গদাকে যারা ، যারা খুজেছেন তারা সেই চিত্রাঙ্গদাকে দীপাবলির মাঝে দেখতে পাবেন। দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায় ، বাংলা সাহিত্যের এক নারী ، যাকে না জানলে ، না চিনলে ، পাঠকদের পাঠ্য জগতে একটা সাধারণ কিশোরীর অসাধারণ নারী হয়ে ওঠার উপ্যাখান হলো সাতকাহন। সমরেশ মজুমদার তার কলমের ছোয়ার যে নারীর কল্পছায়া আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন، সেটা নিঃসন্দেহে যর্থাথ এবং সাবলীলدربارهی সাতকাহন
اطلاعات تکمیلی برنامه
بارگذاری شده توسط
สิริบังอร อับดุลเลาะมาน
نیاز به اندروید
Android 5.0+
دسته بندی
نمایش بیشتر